অ্যালি ক্রপিং হলো কৃষি বনায়নের বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে একটি সফল পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে সাধারণত লিগিউম জাতীয় গুল্ম বা বৃক্ষ নির্দিষ্ট দূরত্বে ঘন সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়। দুই সারির মাঝে কৃষিজ ফসলের চাষ করা হয়।
নার্সারির জন্য নির্বাচিত জমি উর্বর ও দোআঁশ মাটি সম্পন্ন হতে হবে। অপেক্ষাকৃত উঁচু, সমতল ও আলো বাতাস সম্পূর্ণ হতে হবে। পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থা এবং মালামাল ও চারা পরিবহনে উন্নত ব্যবস্থা থাকতে হবে।
গর্জন, শাল গাছের বীজ খুব বেশি সময় সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। এতে বীজের অংকুরোদগম হার কমতে থাকে। এদের সংরক্ষণকাল সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। তাই গর্জন, শাল গাছের বীজ গাছ থেকে ঝরে পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোপণ করতে হয়।
কোনো পরিকল্পনার আওতায় ব্যাপক এলাকা জুড়ে বনায়ন করার জন্য অস্থায়ী নার্সারি তৈরি করা হয়। যেমন- সড়ক ও জনপদ বিভাগ হতে নতুন রাস্তা নির্মাণের পর দু'পাশে গাছ লাগানোর সময় সতেজ চারা অল্প সময়ে, কম পরিবহন খরচে পাওয়ার জন্য অস্থায়ী নার্সারি তৈরি করা হয়।
কৃষি ক্ষেত্রে নার্সারির প্রয়োজনীয়তা অনেক। আমাদের দেশে অধিক জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে বনজ সম্পদ আজ ধ্বংসের মুখোমুখি। এর ফলে আমাদের পরিবেশ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বৃক্ষ সংরক্ষণ ও বনায়ন করা দরকার। আর এজন্য প্রয়োজন সবল চারা। সবল চারা পাওয়া যায় নার্সারি থেকে। এছাড়া বিভিন্ন চারা যেগুলো হুমকির মুখে সেগুলোকে নার্সারিতে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে টিকিয়ে রাখা হয়।
আমাদের দেশে কৃষি বনায়ন জরুরি কারণ বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ এবং ভূমি সীমিত। বিশাল জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে এ ভূমি সক্ষম নয়। কৃষি বনায়নের মাধ্যমে একই জমিতে বৃক্ষ, ফসল, পশুপাখি ও মৎস্য উৎপাদন করা যায়। সব উপাদান সমন্বিতভাবে পরিবেশকে সমৃদ্ধ রাখে। অর্থনৈতিকভাবে এ বনায়ন লাভজনক।
সীমিত ভূমির বহুমুখী ব্যবহার করে বিশাল জনসংখ্যার বহুমুখী চাহিদা মেটানোর জন্যই কৃষি বনায়ন গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয় পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যও বনায়ন জরুরি। তাই আধুনিক প্রযুক্তিতে কৃষি বনায়ন এখন শুধুমাত্র সময়ের দাবি।